Connect with us
Latest News

Lifestyle

সাইবার ক্রাইম

Published

on

দিন বদলেছে। বদলেছে সভ্যতার বিবর্তনে পালাবদলের পালা। পাল্টেছে মানুষের আদব-কায়দা জীবনধারণের রীতিনীতি সঙ্গে। টেকনোলজি এতটাই উন্নত হচ্ছে যে মানুষকে কর্মের প্রয়োজনীয়তা কমিয়ে কুরে বানিয়ে দিচ্ছে ক্রমে ক্রমে। তাই এখন পরিশ্রমের মাপকাঠি যতই কমে গেছে বর্তমান পরিস্থিতিতে যেকোনো রকম কাজ করার জন্য পরিশ্রমের হ্রাসের পাশাপাশি ঘরে বসেই জটিল থেকে বৃহত্তর কাজ থেকে শুরু করে যেকোনো রকম টেকনিক্যাল সমস্যার সমাধান সম্ভব হয়েছে। ব্যাংকের টাকা লেনাদেনা থেকে শুরু করে, কোথাও যাবার জন্য টিকিট কাটা থেকে ব্যাংকিং সংক্রান্ত যেকোন অন্যান্য প্রয়োজনীয়তা মেটানো সম্ভব।

সাইবার ক্রাইম কি?

সাইবার অপরাধ বা কম্পিউটার অপরাধ এমন একটি অপরাধ যা কম্পিউটার এবং কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সাথে সম্পর্কিত। কম্পিউটার একটি অপরাধ সংঘটনে ব্যবহৃত হয়ে থাকতে পারে বা এটা নিজেই লক্ষ্য হতে পারে। দেবারতি হালদার ও কে জয়শংকর সাইবার অপরাধকে সংজ্ঞায়িত করেছেন “আধুনিক টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক, যেমন ইন্টারনেট (চ্যাট রুম, ইমেল, নোটিশ বোর্ড ও গ্রুপ) এবং মোবাইল ফোন (এসএমএস / এমএমএস) ব্যবহার করে, অপরাধমূলক অভিপ্রায়ে কোন ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃতভাবে সম্মানহানি, কিংবা সরাসরি বা পরোক্ষভাবে শারীরিক বা মানসিক ক্ষতি, বা ক্ষতির কারণ হওয়া”। এ ধরনের অপরাধ একটি জাতির নিরাপত্তা ও আর্থিক স্বাস্থ্য হুমকি হতে পারে। আইনগত বা আইনবহির্ভূতভেবে বিশেষ তথ্যসমূহ বাধাপ্রাপ্ত বা প্রকাশিত হলে গোপনীয়তার লঙ্ঘন ঘটে। হ্যাকিং, কপিরাইট লঙ্ঘন, শিশু পর্নোগ্রাফির মতো অপরাধগুলো বর্তমানে উচ্চমাত্রা ধারণ করেছে। লিঙ্গের ভিত্তিতে দেবারতি হালদার ও কে জয়শংকর নারীর প্রতি সাইবার অপরাধকে সংজ্ঞায়িত করেছেন, “ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোনের আধুনিক টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে, ইচ্ছাকৃতভাবে মানসিক এবং শারীরিক ক্ষতির উদ্দেশ্যে নারীর প্রতি অপরাধ”। আন্তর্জাতিকভাবে, রাষ্ট্রীয় বা ও-রাষ্ট্রীয় সত্তা কর্তৃক গুপ্তচরবৃত্তি, আর্থিক প্রতারণা, আন্তঃসীমান্ত অপরাধ, কিংবা অন্তত একটি রাষ্ট্রের স্বার্থ জড়িত এরূপ বিষয়ে হস্তক্ষেপজনিত সাইবার অপরাধকে সাইবার যুদ্ধ হিসেবে অভিহিত করা হয়।

একটি রিপোর্ট (ম্যাকাফি কর্তৃক স্পন্সরকৃত) অনুমান করে যে, বিশ্ব অর্থনীতিতে বার্ষিক ক্ষতি ৪৪৫ বিলিয়ন ডলার। তবে একটি মাইক্রোসফটের রিপোর্ট দেখায় যে জরিপ ভিত্তিক অনুমান “একেবারে ভ্রান্ত” হয় এবং সত্যিকারের লোকসানকে অতিরঞ্জিত করে। অনলাইন ক্রেডিট এবং ডেবিট কার্ড জালিয়াতির ফলে ২০১২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রায় $ ১.৫ বিলিয়ন ডলার হারিয়ে গেছে। ২০১৬ সালে একটি গবেষণায় অনুমান করা হয়, সাইবার অপরাধের খরচ ২০১৯ সালে ২.১ ট্রিলিয়ন ডলারে উন্নীত হতে পারে।

সাইবার ক্রাইমের কারণ:-

এই ইন্টারনেটের যুগে আমরা আমাদের জীবনের প্রায় অনেক বেশি পরিমানের সময় “online” থেকেই খরচ করি।
তবে, ইন্টারনেট এতো মজার এবং সবাইর প্রিয় হওয়ার কারণ কিন্তু প্রচুর রয়েছে।
নতুন নতুন খবর অনেক তাড়াতাড়ি বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে পেয়ে যাওয়া, যেকোনো জায়গার থেকে আমাদের প্রিয়জনের সাথে কথা, চ্যাটিং এবং video call এর মাধ্যমে যোগাযোগ, ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনলাইন কেনাকাটা করা, যেকোনো বিষয়ে সঠিক তথ্য গ্রহণ, মনোরঞ্জনের জন্য ভিডিও দেখা, অনলাইন গেম খেলা এবং online bill payment এর মতো প্রায় সব ধরণের কাজ আজ ইন্টারনেটের মাধ্যমে অনেক সহজে করে নেয়াটা সম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সাইবার ক্রাইমের প্রকারভেদ:-

কম্পিউটার জালিয়াতি হলো কম্পিউটার ব্যবহার করে নির্দিষ্ট অভিপ্রায়ে কিছু করা বা করা থেকে বিরত থাকার জন্য কোন বিষয়ের মিথ্যা বর্ণন। এই প্রেক্ষাপটে, প্রতারক নিম্নলিখিত সুবিধা পাবে। অনুমোদিত তথ্য পরিবর্তন। এজন্য প্রযুক্তিগত দক্ষতার প্রয়োজন। তথ্য পরিবর্তন কর্মচারীদের চুরির সাধারণ ধরন, যেমন ভুল তথ্য, নির্দেশনা বা প্রক্রিয়া প্রবেশ করানো। আউটপুট পরিবর্তন, ধ্বংস বা চুরি। অননুমোদিত লেনদেন গোপন করার জন্য এটা করা হয় যা সহজে ধরা মুশকিল। সঞ্চিত তথ্য পরিবর্তন বা মুছে ফেলা। জালিয়াতির অন্যান্য ধরন হতে পারে কম্পিউটার সিস্টেম, ব্যবহার করে ব্যাংক জালিয়াতি, কার্ড জালিয়াতি, পরিচয় প্রতারণা, চাঁদাবাজি, এবং শ্রেণীবদ্ধ তথ্য চুরি ইত্যাদি। ফিশিং ও সামাজিক প্রকৌশল প্রয়োগ করে এবং গ্রাহক ও ব্যবসার ওপর.লক্ষ্য করে নানা ধরনের ইন্টারনেট স্ক্যাম সংঘঠিত হচ্ছে। বর্তমান প্রযুক্তিতে মোবাইলে একটি অনবদ্য ব্যবহারিক মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহারের জন্য অত্যন্ত সহজ এবং এভেলেবেল ছোট থেকে বড় ব্যবহার করে না এরকম মানুষের সংখ্যা বিড়াল আর তার জন্য মোবাইল মাধ্যমে প্রবণতা যথেষ্ট পেরেছে আজকাল কম্পিউটারের যে কার্যকলাপ হয় সেটা পুরোটাই মোবাইল দেওয়া সম্ভব আলাদা করে এক লাইনের জন্য মোবাইল ব্যাবহার কেউ করে না যার কারণে ছবি এডিট থেকে শুরু করে ফোনের ভয়েস রেকর্ড বা ফিশিং ইমেইল এমনকি ভিডিওগ্রাফি সবটাই সহজ হয়েছে। হ্যাকিং, কপিরাইট লঙ্ঘন, শিশু পর্নোগ্রাফির মতো অপরাধগুলো বর্তমানে উচ্চমাত্রা ধারণ করেছে। মোবাইল ডিভাইস এবং তথ্যের নিরাপত্তা সংক্রান্ত শঙ্কা
অনুনমোদিত বা উদ্দেশ্যপ্রনোদিত মোবাইলে ব্যবহার এবং হারিয়ে যাওয়া বা চুরি যাওয়া মোবাইলের নিরাপত্তা সংক্রান্ত শঙ্কা। হারিয়ে বা চুরি যাওয়া ডিভাইস বর্তমানে মোবাইল ফোন ব্যক্তি জীবনে অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। যদি কোনো কারণে এটি হারিয়ে যায় তবে তা নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বড় শঙ্কা হিসাবে দেখা দেয়। কারণ, অনেক সংবেদনশীল এবং গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সাইবার অপরাধীদের হাতে চলে যেতে পারে। ফোনে ইনস্টল করা অ্যাপের থেকেই ব্যবহারকারীর বয়স, লিঙ্গ, এলাকা, আগ্রহ, শারীরিক অবস্থা এমন কী ব্যবহারকারী কোন সন্তান আশা করছে কি না জানা যায়। ফোন আনলক করার জন্য পাসওয়ার্ড বা বায়োমেট্রিক প্রমাণীকরণ ব্যবহার করুন। সিম কার্ডের জন্য সিম লক অ্যাকটিভেট করুন। কারণ, যতই আপনি ফোন লক করুন না কেন, মোবাইলটি খোয়া গেলে যে কেউ আপনার সিমকে ব্যবহার করতে পারবে।

গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ্যে
মোবাইল ডিভাইসে তথ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যপ্ত না থাকলে, ব্যক্তির পরিচয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকির মুখে চলে যেতে পারে। আপনার ব্যক্তিগত ব্যাকিং তথ্যও নিরপত্তা হারাতে পারে।
তাই নিরাপত্তার খাতিরে ব্যাকিং এবং ক্রেডিট কার্ড সংক্রান্ত তথ্য, পাসওয়ার্ড ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মোবাইল ফোনে না রাখাই ভালো। ব্যবহার করার পর অ্যাপ থেকে লগ আউট নিশ্চত করুন।

মুক্ত ওয়াই-ফাই
অধিকাংশ ক্ষেত্রে মুক্ত ওয়াই-ফা-এর সঙ্গে মোবাইল ফোনের সংযোগ নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ঝুঁকি কারণ হতে পারে। তাই মুক্ত ওয়াই-ফাই ব্যবহার করে ব্যাকিং লেনদেন বা সংবেদনশীল তথ্য আদানপ্রদান না করাই ভালো। অন্য ব্যবহারকারীর যদি আপনার মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যবহারের প্রয়োজন না হয় তবে ব্লুটুথ কানেশনকে অদৃশ্য রাখুন। যে কেউ ব্লুটুথের মাধ্যমে আপনার ল্যাপটপ বা মোবাইল ফোনে প্রবেশ করেত চায়, তবে ওই ব্লুটুথের সীমানার বাইরে চলে আসুন। তাহলে আপনা থেকেই সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। মুক্ত ওয়াইফাই-এ লগ-ইন করলেন, তারপর একটি ভিপিএন পেলেন বা নিরাপদ নেটওয়ার্কের বার্তাল, তবু সেই নেটওয়ার্কে থাকাকালীন কোনো আর্থিক, চিকিৎসা বা ব্যবসা সংক্রান্ত কাজ করবেন না। মুক্ত নেটওয়ার্কে প্রবেশের পর কোনো পাসওয়ার্ড বা কোনো সংবেদনশীল তথ্য দেবেন না।

মোবাইল সংক্রান্ত ঝুঁকি:-

মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন এবং অপারেটিং সিস্টেমের ক্ষেত্রে নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি থেকে যায়। আমরা অনেক সময় ফ্রি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশ ডাইনলোড করে থাকি। সেগুলি গোপনীয়তার শর্ত আমরা কখনও খুলেও দেখি না। প্রচুর অ্যাপ্লিকেশন আছে যারা আমাদের তথ্য চুরি করতে পারে। অ্যাপ্লিকেশনটি আপনার মোবাইলে ম্যালওয়ার হিসাবে ডাউনলোড হয়। অস্বীকৃত সূত্র থেকে মোবাইল বা ল্যাপটপে কোনো কিছু ডাউনলোড করবেন না। কোনো অ্যাপকে তথ্য নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার আগে ভাবুন সত্যিই কী একটি ফ্ল্যাশলাইটের আপনার মোবাইলের লোকেশন জানায় কোনো প্রয়োজন আছে? ব্যবহার না হলে অ্যাপকে দেওয়া অনুমিত ফিরিয়ে নিন।

মোবাইলে ফোনে আক্রমণ হলে কী ধরনের প্রভাব পড়ে:
মোবাইলে সংরক্ষিত ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশ্যে চলে আসে বা হারিয়ে যায়। ম্যালিসিয়াস সফটওয়্যারে জন্য আর্থিক ক্ষতি এবং উচ্চ মূল্যের এসএমএস এবং কল পরিষেবার জন্য ক্ষতি। গোপনীয়তা আক্রমণের মুখে পড়ে। যার মধ্যে রয়েছে, ব্যবহারকারীর অজ্ঞাতে মোবাইল ফোন লোকেশন, ব্যক্তিগত এসএমএস এবং কল ট্র্যাকিং। মোবাইল ফোনের উপর নিয়ন্ত্রণ হারানো এবং অজ্ঞাতে লক্ষ্যবস্তুতে হামলার জন্য মাধ্যম হয়ে ওঠা।

প্রতিকার:-

কম্পিউটার অপরাধ বা মোবাইল ক্রাইম সনাক্তকরণ এবং শাস্তির ব্যাপারে সাইবার অপরাধী কার্যক্রমবিরোধী কর্মসূচী একটি বড় ব্যাপার। জাঁ-লুপ রিসেটের (ইএসএসইসি আইএসআইএসে রিসার্চ ফেলো) মতে, প্রযুক্তিগত দক্ষতা এবং অভিগম্যতা আর সাইবার অপরাধের বাধা হিসাবে কাজ করে না। মূলত ইন্টারনেটের মাধ্যমে হ্যাকিং সম্প্রদায় ব্যাপকভাবে তাদের জ্ঞান বৃদ্ধি করায় কয়েক বছর আগের তুলনায় হ্যাকিং এখন অনেক কম জটিল। ব্লগিং সম্প্রদায় অনেক বেশি তথ্য শেয়ারিংএ অবদান রাখায় নতুনরা পুরোনো হ্যাকারদের ‘জ্ঞান এবং পরামর্শ থেকে উপকৃত হতে পারছে। উপরন্তু, হ্যাকিং তুলনাযমূলক সস্তা হয়ে গেছে। ক্লাউড কম্পিউটিং যুগের আগে,স্প্যাম বা কেলেঙ্কারী করতে একটি ডেডিকেটেড সার্ভার, সার্ভার ব্যবস্থাপনা, নেটওয়ার্ক কনফিগারেশন এবং রক্ষণাবেক্ষণ, ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী মান জ্ঞান, ইত্যাদি দক্ষতা প্রয়োজন ছিল। সেবা হিসেবে ইমেইল সফটওয়্যারটি পরিমাপযোগ্য, সস্তা, বিশাল এবং এর দ্বারা সহজে স্প্যাম ছড়ানো যেতে পারে। জাঁ-লুপ রিসেট ব্যাখ্যা করেন যে,ক্লাউড কম্পিউটিং আক্রমনের একটি উপায় হিসেবে যেমন – জোরপূর্বক পাসওয়াররড, বুটনেট নাগালের উন্নতি, অথবা স্প্যামিং প্রচারণা সুবিধা, একটি সাইবার অপরাধী জন্য সহায়ক হতে পারে।

বর্তমান সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে অবশ্যই প্রযুক্তিবান্ধব হতে হবে। তবে যে কোনো ডিভাইস ব্যবহারের আগে এর ক্ষতিকর দিকটিও জানতে হবে। অভিভাবকরা অনেক সময় টেকনোলজি সম্পর্কে জানেন না, তারা শিখতেও চান না। বাচ্চাদের হাতে ডিভাইস দেওয়ার আগে এর সম্পর্কে অভিভাবকদেরও বুঝতে হবে। তারপর বাচ্চাদের হাতে দিতে হবে। তাদের হাতে দেওয়ার আগে ফিল্টারিং করা যেতে পারে। সে কী কী দেখবে, আর কী কী দেখতে পারবে না, তা বলে কিংবা নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সীমাবদ্ধ করে দেওয়া সম্ভব। অর্থাৎ আপনার বাসার ওয়াইফাই নেটওয়ার্ক বা মোবাইল অথবা ডিজিটাল ডিভাইসে কিছু সাইট ব্লক করে দিতে পারেন। সেগুলো রেগুলার মনিটরিং করা যেতে পারে। ধীরে ধীরে টেকনোলজি সম্পর্কে যখন বাচ্চা বুঝতে শিখবে, তখন সেই শিশুটি বড় হয়ে সাইবার হয়রানি রুখতে সক্ষম হবে। তার ছোটবেলা থেকে মানসিকভাবে এ বিষয়ে জেনেশুনে বেড়ে উঠবে।

শিক্ষার্থীদের ব্রাউজ হিস্ট্রি যদি মা-বাবা দেখতে পারেন, তাহলে খুবই ভালো হয়। ভিপিএন যদি ব্যবহার করে, তাহলে যে জায়গাগুলোতে যাওয়ার সুযোগ নেই, সেখানেও যে কেউ যেতে পারে। যদি ব্রাউজ হিস্ট্রি দেখেন, তাহলে এগুলো বুঝতে পারবেন। সামাজিক শিক্ষাটা ডিজিটাল ফরম্যাটে নিয়ে এলেই হবে। মানুষ ভুল করতেই পারে। সংশোধনের জায়গাও আছে। বাবা-মাকে অবশ্যই সন্তানকে বোঝাতে হবে। দরকার হলে যে জায়গায় সমস্যা মনে করছেন, সেটা নিয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলা যেতে পারে। যারা হ্যারাসমেন্টের শিকার হচ্ছেন, তাদের প্রতি তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ঝড়ের বেগে দেখানো উচিত হবে না। ভুক্তভোগীদের কিছুটা সময় দিতে হবে। ধীরে ধীরে তাদের বোঝাতে হবে। বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তাদের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে তুলতে হবে।

তদন্ত

কম্পিউটার প্রমাণের একটি উৎস হতে পারে। এমনকি যেখানে একটি কম্পিউটার সরাসরি অপরাধমূলক কাজের জন্য ব্যবহার করা হয় না, সেখানেও একটি লগ ফাইল আকারে অপরাধমূলক রেকর্ড থাকতে পারে। অধিকাংশ দেশে ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারদের পূর্বা-নির্ধারিত সময় পরিমাপের জন্য তাদের লগ ফাইল রাখার প্রয়োজন হয়। উদাহরণস্বরুপঃ ইউরোপীয় ব্যাপক তথ্য ধারণ নির্দেশিকার (ইউরোপীয় ইউনিয়ন দেশে প্রযোজ্য) মতে, সব ই-মেইল ট্রাফিক সর্বনিম্ন ১২ মাসের জন্য রেখে দেওয়া উচিত।

আইন-প্রণয়ন

নানারকম সহজ আইনের দরূন সনাক্তকরণ থেকে বাচতে সাইবার অপরাধীরা উন্নয়নশীল দেশগুলো বেছে নিচ্ছে। এসব উন্নয়নশীল দেশ, যেমন ফিলিপাইনে, সাইবার অপরাধের আইনগুলো নামমাত্র হয়ে থাকে। এই দুর্বল আইন সাইবার অপরাধীদের আন্তর্জাতিক সীমানায় অলক্ষিত থাকার অনুমতি দেয়। এমনকি যখন পরিচয় প্রকাশ পায়, এই অপরাধীরা শাস্তি বা একটি দেশের কাছে হস্তান্তর হওয়া এড়াতে পারে, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশ, যেখানে আইন বিকশিত হয়েছে ও যা প্রসিকিউশনের জন্য অনুমতি দেয়। কিছু ক্ষেত্রে এটি কঠিন প্রমাণিত হওয়ায় এফবিআইয়ের মতো এজেন্সিগুলো অপরাধী গ্রেফতার এড়িয়ে প্রবঞ্চনার আশ্রয় নেয়। উদাহরণস্বরূপ, দুই রাশিয়ান হ্যাকার কিছু সময়ের জন্য এফবিআইকে ফাঁকি দিচ্ছিল। এফবিআই একটি সিয়াটল, ওয়াশিংটন ভিত্তিক জাল কম্পিউটিং কোম্পানির ফাদ পাতে। তারা তাদের এই কোম্পানিতে কাজ প্রদানের মাধ্যমে দুই রাশিয়ান হ্যাকারকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আকৃষ্ট করাতে সমর্থ হয়। সাক্ষাৎকার সমাপ্তির পরে, সন্দেহভাজনদের ভবনের বাইরে গ্রেপ্তার করা হয়। এমন চালাক কৌশল কখনও কখনও সাইবার অপরাধীদের ধরার একটা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা হতে পারে যখন দুর্বল আইন এটা অন্যথায় অসম্ভব করে তোলে।

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা সাইবার অপরাধ লড়াইয়ে ২০১৫ সালের এপ্রিলে একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন। নির্বাহী আদেশটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দোষী সাব্যস্ত সাইবার অপরাধীদের সম্পদ জব্দ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে তাদের অর্থনৈতিক কার্যকলাপ রোধ করতে পারবে। এই প্রথম কঠিন আইন প্রণয়ন করে সাইবার অপরাধের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।

যাইহোক, কিছু হ্যাকারকে কম্পিউটার অপরাধের তাদের জ্ঞানের কারণে প্রাইভেট কোম্পানি দ্বারা তথ্য নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ হিসেবে ভাড়া করা হয়, যা তাত্ত্বিকভাবে বিপথগামী ইনসেনটিভ তৈরী করতে পারে। এর একটি সম্ভাব্য পাল্টা যুক্তি হতে পারে, আদালত কর্তৃক সাব্যস্ত হ্যাকারদের ইন্টারনেট বা কম্পিউটার ব্যবহার থেকে বিরত রাখা, এমনকি তাদের কারাগার থেকে মুক্তি দেযর পরেও -যদিও কম্পিউটার ও ইন্টারনেট এবং আরো অনেক কিছু দৈনন্দিন জীবনে কেন্দ্রীয় হয়ে উঠেছে, এই ধরনের শাস্তি আরো কঠোর ও নির্মম হিসেবে দেখা যেতে পারে। যাইহোক, সূক্ষ্ম পন্থা উদ্ভাবন করা হয়েছে যা কম্পিউটার এবং / অথবা ইন্টারনেটের নিষিদ্ধ ছাড়াই সাইবার অপরাধী আচরণ পরিচালনা করতে পারে।এই পন্থা ব্যক্তির কম্পিউটার পর্যবেক্ষণ এবং / অথবা পরীক্ষাকাল এবং / অথবা প্যারোলে কর্মকর্তাদের কম্পিউটার অনুসন্ধান দ্বারা নির্দিষ্ট ডিভাইস ব্যবহারের বিষয়ে জড়িত।

জনসচেতনতা

প্রযুক্তির উন্নতি এবং আরও অনেক বেশি মানুষের ইন্টারনেটের উপর নির্ভরতা হিসাবে সংবেদনশীল তথ্য যেমন ব্যাঙ্কিং বা ক্রেডিট কার্ডের তথ্য সংরক্ষণ করায় অপরাধীরা সে তথ্য চুরি করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। সাইবার অপরাধ বিশ্ব জুড়ে মানুষের জন্য একটি হুমকি হয়ে উঠছে। কিভাবে তথ্য রক্ষা করা হচ্ছে ও অপরাধীরা তথ্য চুরি করার জন্য কী কৌশল ব্যবহার করছে সে সম্পর্কে সচেতনতা আজকের বিশ্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এফবিআই এর ইন্টারনেট ক্রাইম অভিযোগ কেন্দ্র অনুযায়ী ২০১৪ সালে ২৬৯৪২২টি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। সব দাবি মিলিয়ে সেখানে $ ৮০০.৪৯২.০৭৩ মোট ক্ষতিই ছিল। কিন্তু এখনো সাইবার অপরাধ গড় ব্যক্তির ধরাছোয়ার বাইরে হবে বলে মনে হচ্ছে না। বার্ষিক ১.৫ মিলিয়ন সাইবার আক্রমণের ঘটনা ঘটে,এর মানে হল দিনে ৪০০০ আক্রমণ, ঘণ্টায় ১৭০ বা প্রতি মিনিটে প্রায় তিন আক্রমণ হচ্ছে। গবেষণায় দেখাচ্ছে যে শিকারদের মাত্র ১৬% মানুষ হামলা থামাতে জিজ্ঞেস করেছিল। যেকেউ যেকোন কারণে ইন্টারনেট ব্যবহারের দ্বারা শিকারে পরিণত হতে পারে, এজন্য কিভাবে অনলাইনে সবাইকে রক্ষা করা হচ্ছে, সে বিষয়ে সচেতন হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। তবে মাথায় রাখা দরকার যে ক্রাইম যেমন আছে আইন ও তেমন আছে। তাই সাইবারক্রাইম সংক্রান্ত কোনো রকম কোনো অসুবিধা মোকাবিলা করতে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে ইদানীংকালে একটি নম্বরটি প্রোভাইড করা হয়েছে। যদি কেউ এই আপৎকালীন পরিস্থিতিতে পড়েন তাহলে যত শীঘ্রই সম্ভব ‘1930’ এই নম্বরে যোগাযোগ করবেন।

Continue Reading
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Lifestyle

বাংলার ঐতিহ্যবাহী মিষ্টি

Published

on

By

বাংলা মাত্রই ভোজন পিয়াসী মানুষের বসবাস । আর ভোজন থাকবে কিন্তু সেই ভোজনে মিষ্টি থাকবেনা তা তো কোনভাবেই সম্ভব নয়। বাঙালির খাদ্য আহারের তালিকায় মিষ্টি এমন একটা অনবদ্য আহার যেটা ছাড়া পুরো খাবারের প্যাকেজটাই অসম্পূর্ণ। আর এই মিষ্টি ভালোবাসা না এমন মানুষ বোধহয় বিরল । কারণ মিষ্টি মাত্রই করা পাকের শুধু চিনি নির্যাস নয়। হালকা মিষ্টি কম মিষ্টি সবরকম স্বাদের মিষ্টি আমাদের এই বাংলায় বিদ্যমান । এখন গল্পটা ঠিক অন্য জায়গায় মিষ্টি মাত্রই আবার কোনো রকম হলেই হল সেটা কিন্তু একেবারেই না কারণ পশ্চিমবাংলায় বিভিন্ন জায়গায় স্পেশাল মিষ্টির জন্য বিখ্যাত।

১) কলকাতার বাগবাজারের রসগোল্লা: রসগোল্লা বাংলা তথা বাঙালীর সবথেকে প্রিয় মিষ্টি। রসগোল্লা অর্থাৎ রসের গোল্লা, দুধের ছানা দিয়ে তৈরি সাদা রঙের এক ধরনের রসের মিষ্টি। এটিতে সাধারনত চিনি রস ব্যবহার করা হয় কিন্তু শীতের মরসুমে নলেন গুড়ের তৈরি রসগোল্লাও যথেষ্ট বিখ্যাত। ছানা পাকিয়ে গরম রসে ডুবিয়ে এটি প্রস্তুত করা হয়। কলকাতার বাগবাজারের নবীন চন্দ্র দাস ১৮৮৬ সালে প্রথম নরম তুলতুলে স্পঞ্জ রসগোল্লার সৃষ্টি করেন। তাকে রসগোল্লার কলম্বাস বলা হয়। যদিও এই রসগোল্লা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও প্রতিবেশী ওড়িশার বিরোধ বহু দিনের। ২০১৭ সালের নভেম্বর মাসে পশ্চিমবঙ্গ সরকার রসগোল্লার জিআই ট্যাগ লাভ করে। রাজ্যের সব জেলার সব দোকানেই কম বেশি রসগোল্লা পাওয়া গেলেও বাগবাজারের স্পঞ্জ রসগোল্লার স্বাদই আলাদা। আর সেই কারনেই এটি জনপ্রিয়।

২) বর্ধমানের সীতাভোগ: বর্ধমানের সীতাভোগ বাংলার এক সুপ্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন। এটা অনেকটা বাসমতী চালের ভাতের মত দেখতে হয়। সীতাভোগের প্রধান উপাদান সীতাসের প্রজাতির গোবিন্দভোগ চাল। এই চাল গুঁড়ো করে তাতে ১:৪ অনুপাতে ছানা মিশিয়ে পরিমাণমত দুধ দিয়ে মাখা হয়।তারপর একটি ছিদ্রযুক্ত পিতলের পাত্র থেকে উক্ত মিশ্রণকে গরম চিনির রসে ফেলা হয়। এর ফলে সীতাভোগ বাসমতীর চালের ভাতের মত দেখতে লম্বা সরু সরু দানাযুক্ত হয়। এর সাথে ছোট ছোট গোলাপজাম এবং কখনো কখনো কাজুবাদাম ও কিশমিশ মিশিয়ে পরিবেশন করা হয়।

১৯০৪ সালে বড়লাট জর্জ ন্যাথানিয়েল কার্জন বর্ধমানের জমিদার বিজয়চাঁদ মহতাবকে মহারাজা খেতাব দিতে বর্ধমান ভ্রমণ করেন। কার্জনের বর্ধমান আগমনকে স্মরণীয় করে রাখতে বিজয়চাঁদ মহতাব বর্ধমানের জনৈক মিষ্টি প্রস্তুতকারক ভৈরবচন্দ্র নাগকে একটি বিশেষ মিষ্টি প্রস্তুত করতে বলেন। ভৈরবচন্দ্র নাগ সীতাভোগ ও বর্ধমানের অপর বিখ্যাত মিষ্টান্ন মিহিদানা তৈরী করেন।

মিহিদানার প্রধান উপাদান চাল। মিহিদানা প্রস্তুতিতে সাধারণত গোবিন্দভোগ, কামিনীভোগ অথবা বাসমতী চাল ব্যবহার করা হয়। চাল গুঁড়ো করে তার সাথে বেসন এবং জাফরান মেশানো হয়। তারপর জল মিশিয়ে ঈষৎ পীতাভ একটি থকথকে মিশ্রণ তৈরী করা হয়। একটি ছিদ্রযুক্ত পেতলের পাত্র থেকে
উক্ত মিশ্রণ কড়াইতে ফুটন্ত গাওয়া ঘিতে ফেলা হয়। তারপর দানাগুলি কড়া করে ভেজে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে তুলে চিনির রসে রাখা হয়।

৩) বর্ধমানের মনোকরের কদমা: কদমা একটি শুকনো মিষ্টি বিশেষ। বাংলায় অনেক পুরনো মিষ্টির মধ্যে কদমা, বাতাসা, নকুলদানা অন্যতম। রসগোল্লা, পান্তুয়ার আবির্ভাবের পূর্বে বাংলায় অতিথি আপ্যায়নে কদমা বাতাসা দেওয়াই রীতি ছিল। এখন আর এই মিষ্টির আগের কৌলীন্যতা নেই। কেবল পূজার কাজে এখনও বহুল ব্যাবহৃত হয় কদমা। বর্তমান পূর্ব বর্ধমানের মানকর এই কদমার জন্য বিখ্যাত।

৪) জয়নগরের মোয়া: পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলার জয়নগর শহর এই মিষ্টান্নটির জন্য খুব বিখ্যাত। জয়নগরের মোয়ার প্রধান উপাদান কনকচূড় ধানের খই, নলেন গুড়(খেজুর গুড়) ও গাওয়া ঘি। এছাড়াও ক্ষীর, পেস্তা, কাজুবাদাম, কিসমিস দিয়ে তৈরী হয় এই অতি জনপ্রিয় মিষ্টান্ন। জয়নগর শহরের পূর্ণচন্দ্র ঘোষ ওরফে বুঁচকিবাবু এবং নিত্যগোপাল সরকারকে জয়নগরের মোয়ার বাণিজ্যিক বিপণনের পথিকৃৎ বলে ধরা হয়। মূলত শীতের মরসুমে এই মিষ্টি পাওয়া যায়।

৫) নবদ্বীপের লাল দই: নদিয়ার নবদ্বীপের লাল দই বা ক্ষীর দই বা চাক্কু দই বা মিষ্টি দই বাংলার অন্যতম প্রসিদ্ধ মিষ্টান্ন। দই বা দধি মিষ্টান্ন পরিবারের কুলীন সদস্য। দই সাধারনত সাদা হলেও লাল দই একটি স্বতন্ত্র উপাদেয় মিষ্টান্ন। এই দই তৈরির সময় ভাজা লাল চিনি দেওয়া হয় যা থেকে এর রং লালচে ও স্বাদে মিষ্টি হয়। ১৯৩০ সালের দিকে নবদ্বীপের জনৈক কালিপদ মোদক, মতান্তরে কালী ঘোষ, এই দই প্রথম প্রস্তুত করেন। ১৫০ বছরেরও প্রাচীন পাঁচুর মিষ্টির দোকান ‘লক্ষ্মী নারায়ণ মিষ্টান্ন ভাণ্ডার’ অন্যতম বিখ্যাত লাল দইয়ের দোকান। দই তৈরি করার পর দশদিন পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যায়।

৬) চন্দননগরের জলভরা: হুগলী জেলার চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো যেমন বিখ্যাত, তেমনই বিখ্যাত এখানকার জলভরা সন্দেশ। জলভরা সন্দেশ তালশাঁস আকৃতির কড়াপাকের এক বিশেষ সন্দেশ। হুগলি জেলার সূর্যকুমার মোদক এই মিষ্টির আবিষ্কর্তা। শহরের সব দোকানেই জলভরা সন্দেশ পাওয়া যায়। স্বাদে কমবেশি সকলেই সমান। কিন্তু নামে সবার উপরে ‘সূর্য মোদক’-এর জলভরা।

এই সন্দেশ বানানোর মূল উপাদান ছানা, চিনি, গোলাপজল ও নলেন গুড়। সূর্য মোদকের দোকানে গোলাপজল আসে নিয়ম মেনে কনৌজ থেকে। কিছুটা সন্দেশ প্রথমে ছাঁচের মধ্যে দিয়ে আঙুলের চাপে একটা গর্ত করে নেওয়া হয়। সেই গর্তে গোলাপজল ঢেলে আবার সন্দেশ দিয়ে বাকিটা ঢেকে ছাঁচের মুখ বন্ধ করে দিতে হয়। এভাবেই জলভরা সন্দেশ তৈরী করা হয়।

৭) বাঁকুড়া বিষ্নুপুরের মোতিচুরের লাড্ডু’: লাড্ডু শব্দটি সংস্কৃত শব্দ ‘লাড্ডুকা’ বা ‘লাত্তিকা’ থেকে এসেছে যার অর্থ ‘ছোট বল’। আর হিন্দিতে ‘মতি’ শব্দের অর্থ ‘মুক্তা’। ‘চুর’ অর্থ ‘ভাঙা’ বা ‘চূর্ন-বিচুর্ন’ করা। অর্থাৎ ‘মতিচুর’ মানে ‘মুক্তার ভাঙা গুঁড়া’। ছোট ছোট মুক্তা দানার মতো বুন্দিয়া বানিয়ে সেগুলোকে একসাথে হাতে চেপে তৈরি হয় মতিচুরের লাড্ডু। আর এইজন্যই এমন চমৎকার নামের উৎপত্তি। মতিচুরের লাড্ডু ভারত উপমহাদেশের একটি প্রাচীন মিষ্টি। এর বয়স দু’হাজার বছরেরও বেশি। মনে করা হয়, চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের আমলে বিহারে এই মিষ্টির উৎপত্তি হয়। তবে বাংলার বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুরের মতিচুরের লাড্ডু বেশ বিখ্যাত।

৮) ক্যানিং – র লেডিকেনি: লেডিকেনি বা লেডি কেনি হল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের একটি জনপ্রিয় ভারতীয় মিষ্টি। এটি একটি হালকা ভাজা লালচে-বাদামী গোলাকার মিষ্টি যা ছানা এবং ময়দা দিয়ে তৈরি এবং চিনির তরল রসের মধ্যে ভেজানো থাকে। ১৮৫৬-৬২ সালের মধ্যে ভারতে গভর্নর-জেনারেল চার্লস ক্যানিংয়ের স্ত্রী লেডি ক্যানিংয়ের নামে নামকরণ করা হয় মিষ্টির এবং সকলের কাছে মিষ্টিটি লেডিকেনি নামে পরিচিত হয়।‌

৯) বর্ধমানের প্যারা: প্যারা সন্দেশের ইতিহাস শত বছরের পুরানো। প্রথমে শুধু দেব-দেবীর আরাধনায় মিষ্টান্নর প্রয়োজন এই উদ্দেশ্যেই সন্দেশ তৈরি করা হতো। পরবর্তীতে সর্বসাধারণের জনপ্রিয় মিষ্টান্নে পরিণত হয়েছে। মহেন্দ্রী দাস নামের এক ব্যক্তি সর্বপ্রথম বাংলাদেশের নওগাঁ জেলায় তৈরি করা শুরু করেন। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার ছাতনার প্যাড়া বেশ প্রসিদ্ধ।

Continue Reading

Lifestyle

সকালের আমেজ

Published

on

By

কথায় বলে ভোরের প্রকৃতি নিদারুণ সুন্দর । নিদারুণ রোমাঞ্চকর । এটা যে কতটা সত্যি যে না দেখেছে এর অভাবনীয় সৌন্দর্যকে যে না অনুভব করেছে সে ছাড়া আর কেউই বুঝতে পারবে না । কিন্তু ভোরের প্রকৃতি সৌন্দর্যের যে সমস্ত সীমা অতিক্রম করতে পারে তা কিন্তু একেবারেই নয়। আজ হঠাৎই সকাল সকাল কাজের ফাঁকে ব্যালকনিতে যেতেই আকাশের চোখ বোলানো নীল আর পেজা তুলের মত মেঘগুলো নতুন করে আমার মনকে প্রেমের টানে বাধলো। নেহাতই কাজের ফাঁকে বেলকনিতে যাওয়া পড়েছিল না হলে হয়তো আজকের এই প্রকৃতির প্রেমের অনুভূতি মিথ্যে হয়ে যেত । দূরের আকাশে পেজা তুলোর মতো মেঘগুলো আকাশের এধার থেকে ওধারে যেন সূর্য মামার সাথে লুকোচুরি খেলছে । দূরের আকাশ এত গভীর সুন্দর আজকের আকাশের নিদারুণ সৌন্দর্য না দেখলে অনুভব হতো না। সঙ্গে খুব সুন্দর একটা ঠান্ডা বাতাস। ওই স্নিগ্ধ বাতাস যেন কোন তরতাজা প্রাণের সংকেত বয়ে এনেছে । সকল অভিমান খুব রাগ যেন সবকিছুকে নিমিষে মুছে ফেলার ক্ষমতা রাখে সে।

আমার ব্যালকনি গা ঘেসানো কতগুলো সারি সারি আম- কাঁঠাল-পেয়ারা-তালগাছ। ওই গাছগুলি সবুজ রংটা বোধহয় পুরো প্রকৃতির সৌন্দর্যকে ৫ গুন বাড়িয়ে তুলেছে। অদ্ভুত সবুজ রংটা যা পজিটিভ বার্তা নিয়ে আসে ইদানিং জানিনা কেন সবুজ রং দেখতে খুব ভালো লাগে। এতো গেলো প্রকৃতির চিরন্তন সৌন্দর্য। এরই মধ্যে আবার অনবরত কোকিলার চড়াই থেকে শুরু করে না জানি আর কত পাখিদের কিচিরমিচির শব্দ সঙ্গে আবার ছোট্ট ছোট কাঠবিড়ালিগুলোর পেয়ারা খাবার তোরজোড় । ওদের দেখে আমি নিজেই বোকার মত হাসছি। কি যে মিষ্টি লাগছে দেখতে মনে হচ্ছে আদরই করে ফেলি। ধীরে ধীরে আমিও বেমালুম নস্টালজিক হয়ে পড়েছি। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ডায়েরীতে লিখতে লিখতে পা ধরে যাওয়ার পরিস্থিতি । কফিটা এনেছিলাম খাব বলে কিন্তু ঠান্ডাই হয়ে গেল । ঘড়িতে দশটার কাঁটা পার হয়ে গেছে, আমার পেইন কিন্তু চলছে। আর ঠোঁটে মিচকে মিচকি হাসি । আসলে প্রকৃতির সৌন্দর্য বেমালুম ভুলিয়ে দিয়েছে সকল কিছুকে পেছনে ফেলে আসতে।

Continue Reading

Lifestyle

ইম্যুউনিটি বুস্টিং ফুড

Published

on

By

ইমিউনিটি হল শরীরের প্রহরী। এক্ষেত্রে ইমিউনিটি ভালো থাকলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেকটাই বাড়িয়ে নেওয়া যায়। এবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারলে অনেক সমস্যারই সমাধান হওয়া সম্ভব। এক্ষেত্রে সাইট্রাস জাতীয় ফল, হলুদ সহ অন্যান্য খাবার ইমিউনিটি বাড়াতে পারে। ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে নেওয়াটা খুবই জরুরি এক কাজ। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই এই বিষয়টি নিয়ে সতর্ক হয়ে যেতে হবে। আসলে আমাদের পরিবেশের চারিদিকে জীবাণুর বাস। তবে এরপরও আমাদের রোগ হয় না সবসময়। এবার এই রোগ না হওয়ার কারণ অবশ্যই শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। আসলে কোনও জীবাণু শরীরে আক্রমণ চালালে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা প্রথমে নিজের কাজটি করে। এক্ষেত্রে ওই জীবাণুর বিরুদ্ধে নিজের মতো করে লড়াই শুরু করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। এবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকলে জীবাণুর বিরুদ্ধে সহজে জিতে যায় শরীর। এবার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলে আপনার শরীর খারাপ হয়ে যায়। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই ইমিউনিটি বাড়ানোর কাজে জোর দিতে হবে। এবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে এই ইমিউনিটি (Immunity) বেশি থাকার অনেক কারণ থাকতে পারে। এক্ষেত্রে ডায়েটের ভূমিকাও রয়েছে অনেকটাই। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই এই সময়টায় সতর্ক হয়ে যেতে হবে। তবেই সমস্যার করা যেতে পারে সমাধান। এক্ষেত্রে ইমিউনিটি বাড়াতে চাইলে এই কয়েকটি খাবার রাখুন খাবারের তালিকায় (Food to Boost Immunity)। আসুন জানা যাক-

১) হলুদ: হলুদ পারে আপনার সমস্যা দূর করতে। কারণ হলুদের মধ্যে থাকে কারকিউমিন নামক একটি পদার্থ। এই পদার্থ পারে ইমিউনিটি বাড়াতে। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই এই বিষয়গুলি নিয়ে সতর্ক হয়ে যেতে হবে।

২) সাইট্রাস ফল: আসলে এতদিনে নিশ্চয়ই সকলেই জেনে গিয়েছেন যে সাইট্রাস জাতীয় ফল আপনার শরীর ভালো রাখতে পারে। এক্ষেত্রে সাইট্রাস ফল নিয়মিত খেতে শুরু করলে বাড়ে ইমিউনিটি। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই এই দিকটি নজরে রাখতে হবে। এক্ষেত্রে লেবু, আমলকী ইত্যাদি ফলে ভালো পরিমাণে সাইট্রাস রয়েছে।

৩) আদা: আদা আপনার শরীর ভালো রাখার কাজে দারুণ কার্যকরী। আসলে আদার মধ্যে রয়েছে ভালো পরিমাণে অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিবায়োটিক উপাদান। এই কারণে আদা কিন্তু ইমিউনিটি বাড়াতে পারে। তাই আদা রাখুন আপনার খাদ্য তালিকায়।

৪) Dry Fruits: বিভিন্ন ড্রাই ফ্রুটসে রয়েছে ভালো পরিমাণে খনিজ ও ভিটামিন। এবার নিয়মিত এই খাবার খেতে শুরু করলে শরীরে সমস্যা দেখা দেওয়া খুবই স্বাভাবিক। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই এই বিষয়টি নিয়ে সতর্ক হয়ে যেতে হবে। এক্ষেত্রে এই খাবার খান।

Continue Reading
Advertisement

Daily News2 years ago

উষ্ণ সরস্বতী পুজো, হঠাৎ উধাও শীতের আমেজ! আবহাওয়ার বিরাট খবর, বড় বদল

Daily News2 years ago

ডিজেল , পেট্রোল ও রান্নার গ্যাসের লাগামছাড়া মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ঐতিহাসিক কর্মীসভা

Daily News2 years ago

আহিরণ ভগবতী হরিদ্রাসি বিজ্রে হঠাৎ করেই জয়েন্টের ক্লাম খুলে যায়, ফাটল দেখা যায় জয়েন্টের রাস্তায়

Daily News2 years ago

গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয় এক মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক ll

Daily News2 years ago

বাড়ির বাইরে খেলা করার সময় স্করপিও’র চাকায় পিষ্ট হয়ে মৃত্যু হলো ১১ মাসের এক শিশুর l

Daily News2 years ago

বিয়ে বাড়ি যাওয়ার পথে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হল ভাই ও বোনের,আহত ১৫ জন

Daily News2 years ago

হেরিটেজ সপ্তাহ পালন ঐতিহাসিক মুর্শিদাবাদ শহরের নিউ প্যালেসে।

Daily News2 years ago

শিশু নির্যাতন বিষয়ে আলোচনা সাংবাদিক সংঘে

Daily News2 years ago

আবারও মর্মান্তিক পথ দুর্ঘটনা মুর্শিদাবাদের ডোমকলে।

Daily News2 years ago

মানসিক অবসাদের জেরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করলেন এক বৃদ্ধ

Aboard3 years ago

অতিবৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বিড়ির পাতা, বড় সমস্যার সম্মুখীনের সম্ভাবনা

Daily News2 years ago

ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের কাজ করেই কোটি টাকার মালিক, কন্যাশ্রী প্রকল্পেও চলছে কাটমানি

Daily News3 years ago

লাভ,সেক্স ওর ধোঁকা!স্ত্রীর মর্যাদা চেয়ে শ্বশুর বাড়ির সামনে ধর্নায় অন্তঃসত্ত্বা প্রেমিকা ll

Daily News2 years ago

ফরাক্কা বল্লালপুরে পণ্যবোঝাই ট্রাক ও মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে মৃত ১,গুরুতর জখম আরও ১

Daily News3 years ago

ফারাক্কার কেদারনাথ ব্রিজের রলার বেয়ারিং ভেঙে বসে যাওয়ায় বন্ধ ভারী যান চলাচল ll

Daily News3 years ago

খুন হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার তিন অভিযুক্ত,খুশি মৃতের পরিবার ll

Daily News2 years ago

খুন হওয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার অভিযুক্ত ভাই

Daily News3 years ago

নবগ্রামে পলসন্ডায় পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু সামসেরগঞ্জের জয়কৃষ্ণপুর স্কুলের শিক্ষক ll

Daily News3 years ago

পারিবারিক বিবাদের জেরে এক যুবকের খুনকে ঘিরে চাঞ্চল্য ফরাক্কার শিবনগরে ll

Daily News3 years ago

হরিয়ানা থেকে গ্রেপ্তার ফরাক্কার নাবালিকা হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ll

Trending

error: Content is protected !!