নিয়মিত শরীরচর্চা মানুষকে দীর্ঘজীবী করে, স্বাস্থ্যকর জীবন গড়ে তুলতে সহায়তা করে।
হার্ভার্ড হেল্থ পাবলিশিং’য়ের মতে, যাদের ওজন মাত্রাতিরিক্ত তারা যদি শারীরিক পরিশ্রম বাড়ায় তাহলে তাদের গড় আয়ু বাড়তে পারে প্রায় চার বছর।
তবে এজন্য নিয়মিত শরীরচর্চার মাধ্যমে ওজনকে একটা স্বাস্থ্যকর পর্যায়ে নামিয়ে আনতে হবে। আর সেখানেই ধরে রাখতে হবে।
বিরতি দিয়ে দৌড়ানো:
যুক্তরাষ্ট্রের ব্যক্তিগত শরীরচর্চা প্রশিক্ষণ সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ‘ফিট’য়ের প্রশিক্ষক গ্যারি জিনেটি বলেন, “কার্ডিও’ ব্যায়ামের একাধিক উপকারিতা একসঙ্গে নেওয়ার দারুন একটি উপায় হল ‘ইন্টারভেল রানিং’ বা বিরতি দিয়ে দৌঁড়ানো। অল্প সময়ে এই ব্যায়াম শেষ করে ফেলা যায় আর সারাদিন ক্যালরি খরচ হতে থাকে।”
ইটদিস নটদ্যাট ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে তিনি আরও বলেন, “ব্যায়াম শুরু করার আগে শরীর গরম করে নিতে হবে ১০ মিনিট হালকা জগিং করে। এরপর ২০ সেকেন্ড দৌঁড়াবেন আর ৪০ সেকেন্ড জগিং। এভাবে মোট ছয়বার করতে হবে।”
ধীরে ধীরে যদি শরীর নিতে পারে তবে তীব্রতা বাড়াতে হবে। যেমন- ৩০ সেকেন্ড দৌড়, ৩০ জগিং কিংবা চড়াই রাস্তায় ব্যায়ামটি করা। এই ব্যায়ামের মাধ্যমে হৃদসম্পন্দ বাড়বে এবং পুরো শরীরে অক্সিজেন পৌঁছাবে।
সাইকেল চালানো:
সাইকেল চালানো হৃদযন্ত্রের জন্য অত্যন্ত উপকারী একটা ব্যায়াম। দৌড়ানো তুলনায় সাইকেল চালানোতে হাঁটুর ওপর চাপ কম পড়ে। ফলে ব্যায়াম করতে গিয়ে আহত হওয়া সম্ভাবনা কম।
জিনেটি বলেন, “বিরতি দিয়ে দৌড়ানোর মতো সাইকেলও বিরতি দিয়ে চালানো যেতে পারে। ঘরের ভেতরেই ‘স্টেশনারি বাইক’য়ে বিরতি দিয়ে সাইকেল চালানোর অনুশীলন করা যাবে। এখানেও শুরুতে ১০ মিনিট ‘ওয়ার্ম আপ’ করে নিতে হবে।”
‘স্টেশনারি বাইক’য়ের ‘রেজিস্ট্যান্স’ কম বেশি করে বিরতি দিয়ে চালানোর কাজটি করতে হবে। ২০ সেকেন্ড বেশি ‘রেজিস্ট্যান্স’ দিয়ে চালাতে হবে, পরে ৪০ সেকেন্ড কম ‘রেজিস্ট্যান্স’য়ে চালাতে হবে। মোট ছয়বার।
সাঁতার:
জিনেটি বলেন, “সাঁতার কাটা কোনো হাড়ের জোড়ে চাপ ফেলে না বরং তাদের উপকার করে।”
বিভিন্নভাবে সাঁতার কাটা যায়, আর প্রতিটি ধরনে আলাদা আলাদা পেশি ব্যবহার হয়। ফলে এই একটি ব্যায়াম দিয়ে পুরো শরীরকে খাটিয়ে নেওয়া যাবে।
শুরুটা অবশ্যই মৃদু মাত্রায় হবে। যেভাবে সাঁতার কাটতে সবচাইতে সাচ্ছন্দ্য বোধ হয় সেটা দিয়েই শুরু করতে হবে।
সময়ের সঙ্গে মানিয়ে ওঠা শুরু হলে অন্যভাবে সাঁতার কাটার অনুশীলন করতে হবে।
হাইকিং:
“ঘরের ভেতরে ব্যায়াম করা একসময় একঘেঁয়ে হয়ে উঠবে। তাই ব্যায়াম আর প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘোরাঘুরি যদি একসঙ্গে হয় তবে তো সোনায় সোহাগা। আর সেটাই হলো ‘হাইকিং’।
“শুরু করতে হবে সমান রাস্তা থেকে। আধা ঘণ্টা নূন্যতম। শরীরে সইলে পাহাড়ি বা উঁচুনিচু পথ ও আরও সময় নিয়ে হাইকিং করার লক্ষ্য নিতে হবে,” বলেন জিনেটি।
তিনি আরও বলেন, “কার্ডিও’ ব্যায়ামগুলোর পেছনে দিনে সবমিলিয়ে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট সময় দিতে হবে। শরীর কতটুকু সামলাতে পারছে তা বোঝার দারুণ উপায় হল ব্যায়ামের পর কথা বলা। যদি ছোট বাক্য বলে শেষ করতে পারেন তার মানে শরীর ব্যায়ামের চাপ সামাল দিতে পারছে।